পরিবেশ ,তার সম্পদ এবং তাদের সংরক্ষণ
Environment conservation |
1. জৈব ভূ- রাসায়নিক চক্র কাকে বলে?
উত্তর: জীবের প্রোটোপ্লাজমের প্রয়োজনীয় মৌলিক উপাদানগুলি জীবমন্ডলে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে পরিবেশ থেকে জীবে ও জীব থেকে পরিবেশে চক্রাকারে আবর্তিত হওয়াকে জৈব ভূ রাসায়নিক চক্র বলে।
2. নাইট্রোজেন চক্র কাকে বলে? তাৎপর্য লেখ।
উত্তর: যে চক্রাকার পদ্ধতিতে বায়ুমন্ডলের নাইট্রোজেন মাটির মাধ্যমে জীবদেহে প্রবেশ করে এবং জীবদেহ ও মাটি থেকে পুনরায় বায়ুমন্ডলে আবর্তিত হয়, তাকে নাইট্রোজেন চক্র বলা হয়।
তাৎপর্য: 1. নাইট্রোজেন চক্রের মাধ্যমে পরিবেশের নাইট্রোজেনের ভারসাম্য রক্ষিত হয়।
2. প্রাণের ভিত্তি প্রোটোপ্লাজম নাইট্রোজেন ছাড়া গঠন সম্ভব নয়।
3. নাইট্রোজেন চক্র সক্রিয় থাকায় পরিবেশের নাইট্রোজেন ভান্ডার অক্ষুন্ন থাকে।
3. জৈব ভূ -রাসায়নিক চক্রকে পরিপোষক চক্র বলে কেন?
উত্তর: যে সমস্ত মৌলিক উপাদানগুলি জীবের দেহ গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় তাদের পরিপোষক বলে। যেমন- C,H,O,N,Mg,Ca,Na,Fe প্রভৃতি। জীব এই সমস্ত মৌল গুলি পরিবেশ থেকে গ্রহণ করে। পৃথিবীর ভূত্বকে, শিলাস্তরে ,হাইড্রোস্ফিয়ারে বায়ুমন্ডলে উপস্থিত এই সমস্ত পরিপোষক মৌল গুলি চক্রাকার আবর্তনের মাধ্যমে জীবদেহে প্রবেশ করে এবং পুনরায় জীবদেহ থেকে নির্গত হয়ে পরিবেশে ফিরে আসে ও পৃথিবীতে জড় ও জীবের পারস্পরিক অস্তিত্বকে অক্ষুন্ন রাখে। এজন্য জৈব ভূ রাসায়নিক চক্রকে পরিপোষক চক্র বলে।
4. পরিবেশে নাইট্রোজেনের উৎস গুলি উল্লেখ করো।
উত্তর: 1. বিভিন্ন প্রকার নাইট্রোজেন স্থিতিকারী জীবাণু দ্বারা বাতাসের নাইট্রোজেন মাটিতে আবদ্ধ করণ।
2. মাটিতে মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণীর নাইট্রোজেন যুক্ত দেহাবশেষ ও প্রাণীর মলমূত্রের মিশন।
3. কৃষি জমির মাটিতে নাইট্রোজেন ঘটিত বিভিন্ন প্রকার সারের প্রয়োগ।
5. নাইট্রোজেন স্থিতিকরণ বা সংবন্ধন বলতে কী বোঝো
উত্তর: বায়ুমন্ডলের নাইট্রোজেন গ্যাসের বিভিন্ন প্রাকৃতিক বা জৈবিক প্রক্রিয়ার দ্বারা নাইট্রোজেন জাত যৌগে পরিণত হওয়া এবং মাটিতে সঞ্চিত হওয়ার পদ্ধতিকে নাইট্রোজেন সংবন্ধন বা নাইট্রোজেন স্থিতি করণ বলে।
6. শিল্পজাত উপায় নাইট্রোজেনের স্থিতি করণ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: কৃত্রিমভাবে উৎপন্ন বিভিন্ন প্রকার নাইট্রোজেনঘটিত রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে মাটির নাইট্রোজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়। এইভাবে মাটিতে নাইট্রোজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি করাকে শিল্পজাত উপায়ে নাইট্রোজেন স্থিতি করণ বলে।
7. অ্যামোনিফিকেশন, নাইট্রিফিকেশন ও ডিনাইট্রিফিকেশন কাকে বলে?
উত্তর: অ্যামোনিফিকেশন: যে পদ্ধতিতে মৃত জীবদেহের প্রোটিন অংশ বিয়োজক কর্তৃক বিয়োজিত হয়ে প্রথমে অ্যামাইনো অ্যাসিড ও পরে অ্যামোনিয়াতে পরিণত হয় তাকে অ্যামোনিফিকেশন বলে।
নাইট্রিফিকেশন: যে পদ্ধতিতে জীবাণুর ক্রিয়ার ফলে মৃত্তিকাস্থ অ্যামোনিয়া প্রথমে নাইট্রাইট এবং পরে নাইট্রেট যৌগে পরিণত হয় তাকে নাইট্রিফিকেশন বলে।
ডিনাইট্রিফিকেশন : যে পদ্ধতিতে কিছু ডিনাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়ার ক্রিয়ায় নাইট্রোজেন যৌগ বিশ্লেষিত হয়ে নাইট্রোজেন মুক্ত হওয়া অবস্থায় বায়ুমন্ডলে ফিরে আসে তাকে ডিনাইট্রিফিকেশন বলে।
8. মানুষের ক্রিয়া-কলাপ কীভাবে নাইট্রোজেন চক্রকে প্রভাবিত করে?
উত্তর: মানুষের নানান ক্রিয়া-কলাপের জন্য বিশেষ করে নাইট্রোজেন ঘটিত সার অধিক পরিমাণে ব্যবহার করার ফলে জীবজগৎ, মাটি ,জল ও বায়ুমন্ডলের মধ্যে আবর্তিত নাইট্রোজেনের পরিমাণ বহুগুণ বেড়ে চলেছে যার ফলস্বরুপ -
1. নাইট্রাস অক্সাইড একটি গ্রীন হাউস গ্যাস ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে।
2. নাইট্রিক অক্সাইড বায়ুদূষণ ও পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
3. অ্যাসিড বৃষ্টি, কলকারখানার অ্যাসিড মিশ্রিত জল, রাসায়নিক সার ইত্যাদি মেশার ফলে মাটি, ,নদী ও হ্রদের জলের অম্লতা বৃদ্ধি পায়। অধিক আম্লিক মাটি ফসল চাষের পক্ষে ক্ষতিকারক। জল অধিক অম্ল হয়ে পড়লে জল দূষণ ঘটবে এবং জলজ উদ্ভিদ বা প্রাণীর মৃত্যু ঘটবে।
9. রিজার্ভার পুল কাকে বলে?
উত্তর: যে সকল রাসায়নিক পদার্থ জীবদেহ গঠনে কোন গুরুত্বপূর্ণ কার্যকারী ভূমিকা না নেওয়ায় তারা দীর্ঘদিন পরিবেশে সঞ্চিত থাকে ,তাদের রিজার্ভার পুল বা সঞ্চিত ভান্ডার বলে।
10. ব্লু বেবি সিনড্রোম কী ?
উত্তর: কৃষি জমিতে নাইট্রেটজাতীয় সারের অতিরিক্ত প্রয়োগের ফলে কিছু অংশ চুঁইয়ে চুঁইয়ে মাটির তলায় ভৌমজলস্তরে প্রবেশ করে। এই বেশি নাইট্রেটযুক্ত জল পান করলে দেহে নাইট্রেট প্রবেশ করে এবং নাইট্রাইট এ পরিণত হয়, যা রক্তের হিমোগ্লোবিন এর সঙ্গে বিক্রিয়া করে মেথ হিমোগ্লোবিন নামক যৌগ উৎপন্ন করে। ফলে হিমোগ্লোবিনের অক্সিজেন পরিবহন ক্ষমতা কমে যায়। বিজারিত হিমোগ্লোবিন ত্বকের নিচে জমা হওয়ায় দেহ নীল হয়ে যায় বলে একে ব্লু বেবি সিনড্রোম বলে।
11. দূষণ কাকে বলে?
উত্তর: প্রাকৃতিক বা মনুষ্যসৃষ্ট কারণে পরিবেশে বহিরাগত কোন জৈব ,অজৈব বা তেজস্ক্রিয় পদার্থের অনুপ্রবেশের ফলে মাটি, বায়ু ও জলের ভৌত ,রাসায়নিক এবং জৈবিক বৈশিষ্ট্যগুলির অনভিপ্রেত যে সমস্ত পরিবর্তনের দ্বারা মানব জীবন ও অন্যান্য জীব প্রজাতির উপর ক্ষতিকারক প্রভাব সৃষ্টি হয়, তাকে দূষণ বলে।
12. বায়ু দূষণ কাকে বলে?
উত্তর: বিভিন্ন প্রাকৃতিক বা মনুষ্যজনিত কারণে সৃষ্ট কঠিন বজ্রপদার্থ বা অপ্রয়োজনীয় সুক্ষ কনা ও গ্যাসীয় পদার্থের অনুপাত স্বাভাবিকের থেকে কম বা বেশি হলে, পরিবেশে বায়ুর যে অস্বাভাবিক অবস্থার সৃষ্টি হয় , যা মানুষসহ অন্যান্য জীবকুলের ক্ষতিসাধন করে, সেই বায়ুকে দূষিত বায়ু এবং সেই অবস্থাকে বায়ুদূষণ বলে।
13. বায়ুদূষণের কারণগুলি লেখ।
উত্তর:
প্রাকৃতিক কারণ:
1. অগ্নুৎপাত: অগ্ন্যুৎপাতের সময় নির্গত সালফার ডাই অক্সাইড, হাইড্রোজেন সালফাইড প্রভৃতি গ্যাস এবং ধুলো, ছাই, প্রভৃতি বায়ুকে দূষিত করে।
2. দাবানল: দাবানলের ফলে সৃষ্ট গাছপালার ছাই, কার্বন মনোক্সাইড ,নাইট্রোজেনের বিভিন্ন অক্সাইড প্রভৃতি বায়ুতে মিশে দূষণ ঘটায়।
3. মহাজাগতিক বস্তু : ধুমকেতু, উল্কাপাত , মহাজাগতিক রশ্মি দ্বারাও বায়ু দূষণ ঘটে।
মনুষ্যসৃষ্ট কারণ :
1. অরণ্য ধ্বংস: নির্বিচারে গাছপালা কাটার ফলে বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বাড়ছে এবং অক্সিজেনের পরিমাণ কমছে অর্থাৎ বায়ুমন্ডলে অক্সিজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।
2. জীবাশ্ম জ্বালানি: জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে উৎপন্ন হওয়া বিভিন্ন রকম গ্যাস বায়ু দূষণ ঘটায়।
3. গ্রীনহাউস গ্যাস : শ্বসন ও দহনের ফলে উৎপন্ন কার্বন ডাইঅক্সাইড এসি মেশিন, ফ্রিজ থেকে CFC, ধানক্ষেত জলাভূমি থেকে উৎপন্ন মিথেন এই সকল গ্যাসগুলি বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ।
4. SPM ও এরোসেল : বায়ুতে ভাসমান নানারকম রাসায়নিক বাষ্প, ধোঁয়া ও কুয়াশা একত্রিত হয়ে এরোসেল গঠন করে। এগুলি কখনো কখনো ভারী ও কালো হয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি করে যা প্রচন্ড ক্ষতিকারক।
14. ইউট্রোফিকেশন কাকে বলে?
উত্তর: বিভিন্ন কারণে কোন জলাশয়ে দ্রবীভূত পরিপোষক বা জৈব যৌগের পরিমাণ বেশি হলে খাদকের প্রয়োজনের অপেক্ষা উৎপাদকের পরিমাণ বেশি হয়। এর ফলে, ওই জলাশয়ে দ্রবীভূত অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয় এবং জলজ প্রাণীদের মৃত্যু ঘটে। এই ঘটনাকে ইউট্রোফিকেশন বলে।
15. ইউট্রোফিকেশনের কারণগুলি লেখ ।
কারণ: 1. শিল্প, কলকারখানা, প্রাণী ও মানুষের বিভিন্ন প্রকার বজ্যপদার্থ জলাশয়ে বাহিত হয়।
2. কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রকার ফসফেট যুক্ত রাসায়নিক সার, পেস্টিসাইড ও কীটনাশকগুলি বৃষ্টির জলের সঙ্গে বাহিত হয়ে জলাশয়ে পতিত হয়।
3. বৃষ্টির জলের সঙ্গে ধুয়ে মাটি বা পলি জলাশয় সঞ্চিত হয়।
4. ফসফেট জাতীয় কাপড় কাচার ডিটারজেন্ট জলে মিশে তা অনেক সময় জলাশয়ে বাহিত হয়।
5. মৃত্তিকার ক্ষয়প্রাপ্তির কারণে কখনো কোনো উর্বর বস্তু জলে মিশে যায়। এইসব ঘটনাগুলির জন্য জলাশয়ে জৈব যৌগের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং এবং ইউট্রোফিকেশন ঘটে।
16. অ্যালগাল ব্লুম বা শৈবাল ব্লুম কাকে বলে?
উত্তর: ইউট্রোফিকেশনের ফলে কোন বদ্ধ জলাশয়ে যদি নীলাভ সবুজ শৈবাল অতিরিক্ত মাত্রায় বেড়ে যায়, সেই জল থেকে খুব দুর্গন্ধ বের হয় ও জলের রং বদলে যায় এই ঘটনাকে আলগাল ব্লুম বা শৈবাল ব্লুম বলে।
17. BOD বলতে কী বোঝো?
উত্তর: কোনো নির্দিষ্ট সময়ে একক পরিমাণ জলে উপস্থিত জৈব উপাদান সমূহকে অনুজীবের দ্বারা বিয়োজিত করার জন্য যে পরিমাণ অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় তাকে BOD বলে।
18. জৈব বিবর্ধন বা বায়োম্যাগনিফিকেশন কাকে বলে?
উত্তর: এই প্রক্রিয়ায় বিষাক্ত পরিবর্তনবিহীন রাসায়নিক পদার্থ খাদ্যশৃঙ্খলে প্রবেশ করে ও প্রতিটি পুষ্টিস্তরে তার ঘনত্ব বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। যে সকল পদার্থ দীর্ঘদিন ধরে প্রকৃতিতে অবিকৃত থাকে ,তাদের দীর্ঘস্থায়ী জৈব দূষক বলে। জীবদেহে এইসকল পদার্থের কোনো পাচন, বিপাক ও রেচন ঘটে না। ফলে, তারা ক্রমশ জীবদেহে সঞ্চিত হয় ও পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। এই ঘটনাকে জৈব বিবর্ধন বা বায়োম্যাগনিফিকেশন বলে।
19. বসুন্ধরা সম্মেলন কাকে বলে?
উত্তর: ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডি জেনিরোতে 1992 সালে পরিবেশ দূষণরোধ ,গ্রিনহাউস গ্যাসের উৎপাদন হ্রাস ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য বহু দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে যে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তাকে বসুন্ধরা সম্মেলন বলে।
20. গ্রীন বেঞ্চ কী?
উত্তর: সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশানুসারে পরিবেশ সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টে যে বেঞ্চ গঠিত হয়, তাকে গ্রীন বেঞ্চ বলে। প্রতি সপ্তাহে একবার করে এই বেঞ্চের বৈঠক হয়। 1996 সালের 16 এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি কুলদীপ সিং এবং এস সাঘির আহমেদের তত্ত্বাবধানে গ্রীন বেঞ্চ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
21. ওজোন গহবর বলতে কী বোঝো?
উত্তর: পরিবেশে CFC নামক গ্রিনহাউস গ্যাসের অতিবৃদ্ধির কারণে ওজোন স্তরের বিভিন্ন অংশ অস্বাভাবিকভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। এর ফলে, ওজোন গ্যাসের পরিমাণ কমে গিয়ে ওই স্তরে যে ছিদ্র বা গহ্বরের সৃষ্টি হয় তাকে ওজোন গহবর বলে।
22. অ্যাসিড বৃষ্টি কাকে বলে? এর ক্ষতিকারক প্রভাবগুলি আলোচনা করো।
উত্তর: বিভিন্ন কলকারখানা থেকে উৎপন্ন সালফার-ডাই-অক্সাইড ও নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড জলের সঙ্গে বিক্রিয়া করে বায়ুমন্ডলে সালফিউরিক অ্যাসিড ও নাইট্রিক অ্যাসিডে পরিণত হয়ে শিশির, তুষার বা বৃষ্টির জলের সঙ্গে মিশে মাটিতে পতিত হওয়ার ঘটনাকে অ্যাসিড বৃষ্টি বলে।
ক্ষতিকারক প্রভাব:
1. মৃত্তিকার উপর প্রভাব: অ্যাসিড বৃষ্টি মাটির অম্লত্ব বৃদ্ধি করে ফলে উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি যেমন ব্যাহত হয় । তেমনি কিছু অনুজীবের উৎসেচক নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে এমনকি অনুজীব মারা যায়।
2. অরণ্য ও গাছপালার উপর প্রভাব: অ্যাসিড বৃষ্টির মৃত্তিকার পাশাপাশি অরণ্য ও গাছপালার ক্ষতিসাধন করে। গাছের পাতা ঝরে পড়ে এবং পাতায় ছোট ছোট ছিদ্র দেখা যায়।
3. মানব স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব: মানব স্বাস্থ্যের উপর অ্যাসিড বৃষ্টি সরাসরি প্রভাব বিস্তার না করলেও অ্যাসিড বৃষ্টির উপাদানগুলির মাত্রা বৃদ্ধি পেলে হৃদ ও ফুসফুস জনিত রোগ লক্ষণ দেখা যায়।
4. জলাশয়ের উপর প্রভাব : অ্যাসিড বৃষ্টির ফলে জলাশয় জলে অম্লভাব বেড়ে যাওয়ায় মাছের ডিম যেমন নষ্ট হয় তেমনি মাছের বৃদ্ধিও ব্যাহত হয়, এমনকি মাছ মারাও যেতে পারে।
23. পপুলেশন কাকে বলে?
উত্তর: বিশেষ কোন ভৌগলিক অঞ্চলে বসবাসকারী একই প্রজাতিভুক্ত জীব গোষ্ঠীকে পপুলেশন বলে।
24. পপুলেশন ঘনত্ব বলতে কী বোঝো?
উত্তর: কোন ভৌগোলিক অঞ্চলের একক ক্ষেত্রে বা আয়তনে যে পরিমাণে বা সংখ্যায় কোন প্রজাতির জীব বাস করে তাকে পপুলেশন ঘনত্ব বলে।
25. জন্মহার বা ন্যাটালিটি কাকে বলে?
উত্তর: একক সময়ে কোন নির্দিষ্ট প্রজাতির জননের মাধ্যমে যে সংখ্যায় নতুন সদস্য পপুলেশনে যুক্ত হয়, তাকে ওই পপুলেশনের জন্মহার বা ন্যাটালিটি বলে।
26. মর্টালিটি বা মৃত্যুহার কাকে বলে?
উত্তর: একক সময়ে কোন নির্দিষ্ট প্রজাতির যে সংখ্যায় জীবের স্বাভাবিকভাবে মৃত্যু হয় ,তাকে ওই পপুলেশনের মৃত্যুহার বা মর্টালিটি বলে।
27. জলাভূমিকে কেন প্রকৃতির বৃক্ক বলা হয়?
উত্তর: প্রাণীর দেহকোশের বিপাকীয় ক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন অতিরিক্ত অপ্রয়োজনীয় ও ক্ষতিকর পদার্থগুলি যে প্রধান রেচন অঙ্গ দিয়ে দেহ থেকে নির্গত হয়, তাকে বৃক্ক বলে।
বাস্তুতন্ত্রে জলাভূমির ভূমিকাও মানুষের বৃক্কের মত। প্রকৃতিতে জলাভূমিও বৃক্কের মত জল পরিস্রাবণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রাকৃতিক পরিবেশের নোংরা আবর্জনা বৃষ্টির সময় জল প্রবাহের মাধ্যমে ধৌত হয়ে জলাভূমিতে সঞ্চিত হয় এবং জলাভূমি পরিপোষক সম্মৃদ্ধ বোদ মাটি থেকে জলজ উদ্ভিদগুলি পরিপোষক পদার্থ সমূহকে শোষণ করে এবং পরিপোষকহীন অতিরিক্ত জল অবশেষে জলাভূমি থেকে অপসারিত হয়ে যায়। এই কারণেই জলাভূমিকে প্রকৃতির বৃক্ক বলে।
28. গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বিশ্ব উষ্ণায়ন কী ?
উত্তর: পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে গ্রিন হাউস গ্যাস গুলির পরিমাণ দিনের পর দিন বেড়ে চলার ফলে গ্রীন হাউসের একটি আবরণ সৃষ্টি হয়েছে যে গুলির মধ্য দিয়ে ক্ষুদ্র তরঙ্গ দৈর্ঘ্য যুক্ত আলো প্রবেশ করতে পারে। ওই আলো মাটি ও উদ্ভিদ দ্বারা শোষিত হয়। শোষণের পর তাপ বিকিরণ করে কিন্তু সেই তাপ বায়ুমণ্ডলের নির্দিষ্ট গ্যাসের স্তর গুলিকে ভেদ করে বেরিয়ে যেতে পারে না ফলে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়, এই ঘটনাকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বিশ্ব উষ্ণায়ন বলে।
29. জীব বৈচিত্র্য কাকে বলে?
উত্তর: জীবমন্ডলের বিভিন্ন বাস্তুতন্ত্রে উপস্থিত বিভিন্ন প্রজাতির অসংখ্য উদ্ভিদ, প্রাণী ,আণুবীক্ষণিক জীব প্রভৃতির মধ্যে যে বিভিন্নতা বা বৈচিত্রতা প্রকাশ পায়, তাকে একত্রে জীব-বৈচিত্র্য বা বায়োডাইভারসিটি বলে।
30. হটস্পট বলতে কী বোঝো?
উত্তর: পৃথিবীর যে সমস্ত অঞ্চলে অত্যাধিক সংখ্যায় উদ্ভিদ ও প্রাণী, বিশেষ করে আঞ্চলিক প্রজাতি বাস করে এবং যাদের অস্তিত্ব বর্তমানে বিপন্ন হতে চলেছে । অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সংরক্ষণের জন্য সেই সকল অঞ্চলকে হটস্পট বলে।
31. কোন উদ্ভিদের পত্রগহবরে অ্যানাবিনা নামক নীলাভ সবুজ শৈবাল বসবাস করে ?
উত্তর : অ্যাজোলা।
32. নাইট্রোজেন আবদ্ধকারী উৎসেচকটি কী ?
উত্তর : নাইট্রোজিনেজ।
33. একটি কৃত্রিম অনুজীবসারের নাম লেখ।
উত্তর: নাইট্রোজিন, অ্যাজোটোব্যাকটেরিন।
34. নাইট্রোজেন স্থিতিকারী দুটি শৈবালের নাম লেখ।
উত্তর: অ্যানাবিনা, নষ্টক।
35. একটি উদ্ভিদের নাম লেখ যে নাইট্রোজেনকে আবদ্ধ করে?
উত্তর: মটর গাছ।
36. নাইট্রোজেন স্থিতিকারী একটি মিথোজীবী ব্যাকটেরিয়ার উদাহরণ দাও।
উত্তর: রাইজোবিয়াম।
37. লেগ হিমোগ্লোবিন কোথায় থাকে?
উত্তর: শিম্বিগোত্রীয় উদ্ভিদের মূলে।
38. সুপারসনিক বিমান থেকে কোন গ্যাস নির্গত হয়?
উত্তর: নাইট্রিক অক্সাইড।
39. নাইট্রোজেনযুক্ত দুটি সারের নাম লেখ।
উত্তর: ইউরিয়া, অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট।
40. সবুজ সার কী ?
উত্তর : শিম্বিগোত্রীয় উদ্ভিদের মূলে ব্যাকটেরিয়া কর্তৃক নাইট্রোজেন আবদ্ধ হয়। শিম্বিগোত্রীয় গাছ চাষ করে, ওই গাছগুলিকে মাটিতে মিশিয়ে ও পচিয়ে সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়, একে সবুজ সার বলে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন