কোশ ও কোশ বিভাজন
1. কোশ কাকে বলে ?
উত্তর: অর্ধভেদ্য বা প্রভেদক ভেদ্য পর্দাবেষ্টিত প্রোটোপ্লাজমযুক্ত , স্ব প্রজননশীল, জীবদেহের গঠন মূলক এবং জৈবনিক ক্রিয়ামূলক একককে কোশ বলে।
2. ক্রোমোজোম কাকে বলে?
উত্তর: নিউক্লিয়াসের ক্রোমাটিন জালিকা থেকে উৎপন্ন নিউক্লিক অ্যাসিড ও প্রোটিন দিয়ে গঠিত যে সূত্রাকার বা দন্ডাকার অংশ জীবের বংশগত বৈশিষ্ট্য বহন ,পরিব্যক্তি ও বিবর্তনে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করে, তাকে ক্রোমোজোম বলে।
3. সেন্ট্রোমিয়ারের অবস্থান অনুসারে ক্রোমোজোম কয় প্রকার ও কী কী?
উত্তর: সেন্ট্রোমিয়ারের অবস্থান অনুসারে ক্রোমোজোম চার প্রকার -
1. টেলোসেন্ত্রিক ক্রোমোজোম: সেন্ট্রোমিয়ার যখন ক্রোমোজোমের শেষপ্রান্তে অর্থাৎ টেলোমিয়ার অঞ্চলে অবস্থান করে তখন তাকে টেলোসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম বলে।
2. অ্যাক্রোসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম: সেন্ট্রোমিয়ার যখন ক্রোমোজোমের টেলোমিয়ার অঞ্চলের কাছাকাছি স্থানে অবস্থান করে তখন তাকে অ্যাক্রোসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম বলে।
3. মেটাসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম: সেন্ট্রোমিয়ার যখন ক্রোমোজোমের মাঝখানে অবস্থান করে তখন তাকে মেটাসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম বলে।
4. সাবমেটাসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম: সেন্ট্রোমিয়ার যখন ক্রোমোজোমের মাঝখানের ঈষৎ উপরে বা নিচে থাকে তখন তাকে সাবমেটাসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম বলে।
3. সেন্ট্রোমিয়ারের সংখ্যা অনুসারে ক্রোমোজোম কয় প্রকার ও কী কী?
উত্তর: সেন্ট্রোমিয়ারের সংখ্যা অনুসারে ক্রোমোজোম চার প্রকার-
1. আসেন্ত্রিক ক্রোমোজোম: যখন ক্রোমোজোমে একটিও সেন্ট্রোমিয়ার থাকে না তখন তাকে আসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম বলে।
2. মনোসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম: যখন ক্রোমোজোমে একটিমাত্র সেন্ট্রোমিয়ার থাকে তখন তাকে মনোসেন্ত্রিক ক্রোমোজোম বলে।
3. ডাইসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম: যখন একটি ক্রোমোজোমে দুটি সেন্ট্রোমিয়ার থাকে তখন তাকে ডাইসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম বলে।
4. পলিসেন্ত্রিক ক্রোমোজোম: যখন ক্রোমোজোমে দুইয়ের অধিক সেন্ট্রোমিয়ার থাকে তখন তাকে পলিসেন্ত্রিক ক্রোমোজোম বলে।
4. সেন্ট্রোমিয়ার কাকে বলে?
উত্তর: প্রতিটি ক্রোমোজোমের মধ্যে মাঝ বরাবর একটি খাঁজ দেখা যায় একে মুখ্য খাঁজ বলে।
ক্রোমোজোমের মুখ্য খাঁজ অংশে যে ঘন অংশটি ক্রোমাটিড দুটিকে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত রাখে এবং কোশ বিভাজনের সময় বেম তন্তুর সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাকে সেন্ট্রোমিয়ার বলে।
5. জিনের কাজ লেখ।
উত্তর: 1. জিন জীবের বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে।
2. জিন এক জনু থেকে অন্য জনুতে সঞ্চালিত হতে পারে।
3. জিন কোশের শারীরবৃত্তীয় কাজ পরিচালনা করে।
4. জীবের বিবর্তন জিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
6. ইউক্রোমাটিন ও হেটারোক্রোমাটিন কাকে বলে?
উত্তর: ইউক্রোমাটিন: ক্রোমাটিন বা ক্রোমোজোমের যে অংশ কোশচক্রের ইন্টারফেজ দশায় অত্যন্ত সূক্ষ্ম, প্রসারিত এবং হালকাভাবে রঞ্জিত হয় ও বিভাজনের সময় ঘনীভূত ও কুণ্ডলীকৃত হয়ে গাঢ়ভাবে রঞ্জিত হয়, তাকে ইউক্রোমাটিন বলে।
হেটারোক্রোমাটিন: ক্রোমাটিন বা ক্রোমোজোমের যে অংশ কোশচক্রের সমস্ত দশাতে ঘনীভূত ও কুণ্ডলীকৃত অবস্থায় থাকে এবং গাঢ়ভাবে রঞ্জিত হয়, তাকে হেটারোক্রোমাটিন বলে।
7. জিনের বৈশিষ্ট্য গুলি লেখ।
উত্তর: 1. জিন ক্রোমোজোমে অবস্থান করে।
2. জিন নির্দিষ্ট প্রোটিন সংশ্লেষের সংকেত বহন করে।
3. এক বা একাধিক জিন মিলিতভাবে একটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে।
4. জিন জীবের বংশগত বৈশিষ্ট্যের ধারক ,বাহক এবং নিয়ন্ত্রক রূপে কাজ করে।
8. কোষ বিভাজন কাকে বলে? এর গুরুত্ব লেখ।
উত্তর: যে পদ্ধতিতে জনিতৃ কোশ বিভাজিত হয়ে একাধিক অপত্য কোশ সৃষ্টি করে তাকে কোশ বিভাজন বলে।
গুরুত্ব: 1. জীবের আকার আয়তনের বৃদ্ধি ও বিভিন্ন অঙ্গের ক্রমবিকাশের জন্য কোশ বিভাজন প্রয়োজন হয়।
2. ক্ষতস্থান মেরামতের জন্য কোশ বিভাজন প্রয়োজন।
3. ভ্রূণের পরিস্ফুটন এবং বংশবিস্তারের জন্য কোশ বিভাজন প্রয়োজন।
9. অ্যামাইটোসিস কাকে বলে?
উত্তর: বেম গঠন ব্যতিরেখে ও নিউক্লিওপর্দার অবলুপ্তি ছাড়াই যে সরল কোশবিভাজন পদ্ধতিতে কোশের নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম খাঁজ সৃষ্টির মাধ্যমে সরাসরি বিভাজিত হয়ে দুটি অপত্য কোশ গঠিত হয়, তাকে প্রত্যক্ষ কোশ বিভাজন বা অ্যামাইটোসিস বলে।
10. মাইটোসিস কাকে বলে?
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় মাতৃকোশের নিউক্লিয়াস একবার মাত্র বিভাজিত হয়ে সম আকৃতি, সমগুণ ও সমসংখ্যক ক্রোমোজোম বিশিষ্ঠ দুটি অপত্য কোশ সৃষ্টি করে তাকে মাইটোসিস বলে।
11. মিয়োসিস কাকে বলে?
উত্তর: যে পরোক্ষ কোশ বিভাজন পদ্ধতিতে দেহ মাতৃকোশের ক্রোমোজোমসহ নিউক্লিয়াস এবং সাইটোপ্লাজম প্রত্যেকে একবার মাত্র বিভাজিত হয়ে মাতৃকোশের সমআকৃতি, সমবৈশিষ্ট্য ও সমান সংখ্যক ক্রোমোজোমযুক্ত দুটি অপত্য কোশ গঠিত হয় ,তাকে মাইটোসিস বলে।
12. মিয়োসিস কাকে বলে?
উত্তর: যে পরোক্ষ কোশ বিভাজন পদ্ধতিতে জনন মাতৃকোশের ক্রোমোজোম একবার কিন্তু নিউক্লিয়াসসহ সাইটোপ্লাজম দুবার বিভাজিত হয়ে মাতৃকোশের অর্ধেক ক্রোমোজোম যুক্ত চারটি অপত্য কোশ গঠিত হয় তাকে মিয়োসিস বলে।
13. নিউক্লিয়ার অর্গানাইজার কাকে বলে?
উত্তর: কোন কোন ক্রোমোজোমে গৌণ খাঁজ থাকলে ওই অংশের বিভাজন কালে ঐ অংশের সঙ্গে নিউক্লিয়া়াস যুক্ত থাকে, নিউক্লিওলাস গঠনে ইহা সাহায্য করে বলে একে নিউক্লিয়ার অর্গানাইজার বলে।
14. মাইটোসিসকে পরোক্ষ কোশ বিভাজন বলে কেন?
উত্তর: মাইটোসিস কোশ বিভাজন প্রক্রিয়ায় মাতৃকোশ সরাসরি বিভাজিত না হয়ে কতকগুলি অন্তর্বর্তী দশার মাধ্যমে বিভাজিত হওয়াই মাইটোসিসকে পরোক্ষ কোশ বিভাজন বলে।
15. মাইটোসিসকে সমবিভাজন বা সদৃশ বিভাজন বলে কেন?
উত্তর: মাইটোসিস প্রক্রিয়ায় মাতৃকোশের ক্রোমোজোম সংখ্যা ও অপত্য কোশের ক্রোমোজোম সংখ্যা সমান থাকায় মাইটোসিসকে সমবিভাজন বা সদৃশ বিভাজন বলে।
16. মিয়োসিসকে হ্রাস বিভাজন বলে কেন?
উত্তর: মিয়োসিস কোশ বিভাজন প্রক্রিয়ায় মাতৃকোশের ক্রোমোজোম সংখ্যা অপত্য কোশের অর্ধেক হয়ে যাই তাই মিয়োসিসকে হ্রাস বিভাজন বলে।
17. প্রোফেজ দশার বৈশিষ্ট্য গুলি লেখ।
উত্তর: 1. এটি ক্যারিওকাইনেসিসের প্রথম দীর্ঘস্থায়ী দশা।
2. ক্রোমোজোমগুলি জোড়সংখ্যক অবস্থায় পরিণত হয়, এবং দৃশ্যমান হয়।
3. প্রতিটি ক্রোমোজোম দুটি করে ক্রোমাটিড যুক্ত হয় যারা পরস্পর সেন্ট্রোমিয়ারে যুক্ত থাকে।
4. এই দশার শেষের দিকে নিউক্লিওপর্দা ও নিউক্লিওলাসের অবলুপ্তি শুরু হয়।
18. মেটাফেজ দশার বৈশিষ্ট্য গুলি লেখ।
উত্তর: 1. ক্যারিওকাইনেসিসের দ্বিতীয় ,স্বল্পস্থায়ী দশা।
2. এই দশার শুরুতে নিউক্লিয় পর্দা ও নিউক্লিওলাস এর সম্পূর্ণ অবলুপ্তি ঘটে।
3. ক্রোমোজোম গুলি বেমের বিষুব অঞ্চলে মেটাফেজ প্লেটে সজ্জিত হয়।
4. দ্বিমেরু যুক্ত বেমতন্তু সহ স্পিন্ডিল গঠিত হয় ।
19. অ্যানাফেজ দশার বৈশিষ্ট্য গুলি লেখ।
উত্তর: 1. ক্রোমোজোমের সেন্ট্রোমিয়ার দু'ভাগে বিভক্ত হয়ে অপত্য ক্রোমোজোম সৃষ্টি হয়, যা একটি করে সেন্ট্রোমিয়ার ও ক্রোমাটিড নিয়ে গঠিত হয়।
2. ক্যারিওকাইনেসিসের তৃতীয় সবচেয়ে স্বল্পস্থায়ী দশা।
3. অপত্য ক্রোমোজোম দুটির মাঝে ইন্টার জোনাল তন্তু গঠিত হয়।
4. দশার শেষে সমসংখ্যক ক্রোমোজোম গুলি দুই মেরুতে পৌঁছোয়।
20. টেলোফেজ দশার বৈশিষ্ট্য গুলি লেখ।
উত্তর: 1. অপত্য ক্রোমোজোমগুলির বেমের দুই প্রান্তে পৌঁছানো টেলোফেজ দশা সূচনা করে।
2. বেমের দুই বিপরীত মেরুতে ক্রোমোজোমগুলিকে ঘিরে নিউক্লিয় পর্দার আবির্ভাব ঘটে এবং নিউক্লিওলাসের আবির্ভাব ঘটে।
3. ক্রোমোজোম গুলি প্যাচ খুলে পুনরায় লম্বা সরু সুতোর মতো এবং অস্পষ্ট হয়।
21. কোশ বিভাজন ও বৃদ্ধির মধ্যে সম্পর্ক লেখ।
উত্তর: কোশ বিভাজন ও বৃদ্ধির মধ্যে খুব নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। কারণ, এককোশী জীবদের নিজেদের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং বহুকোশী জীবদের ক্ষেত্রে সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেহের বৃদ্ধি ও পরিপূর্ণতার জন্য কোশ বিভাজন প্রয়োজন অর্থাৎ জীবদেহের প্রতিটি কোশ পূর্বতন কোন কোশের বিভাজনের ফলে উৎপন্ন হয়।
22. "মিয়োসিস বিবর্তনের পথকে প্রসারিত করে "-ব্যাখ্যা করো
উত্তর: মিয়োসিস বিভাজনের প্রথম প্রোফেজ দশার প্যাকাইটিন উপদশায় ক্রসিংওভার ঘটে, ফলে ক্রোমোজোমের জিনগুলির পুনঃসংযুক্তি ও পুনর্বিন্যাস ঘটে। এর ফলে, অপত্য কোশে জনিতৃ কোশ ভিন্ন নতুন বৈশিষ্ট্যের আবির্ভাব ঘটে যা প্রকরণ বা মিউটেশনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে। এইভাবে কয়েকটি জনু ধরে নতুন বৈশিষ্ট্যের ক্রমাগত পরিবর্তন পরিবেশের অনুকূল হলে জীবদেহে সেই বৈশিষ্ট্যটি বিবর্তনের সূচনা ঘটায় এবং নতুন প্রজাতি সৃষ্টিতে সাহায্য করে। তাই বলা হয় যে মিয়োসিস বিবর্তনের পথকে প্রসারিত করে।
23. ক্রোমাটিন জালিকা কাকে বলে?
উত্তর: ইউক্যারিওটিক কোশের নিউক্লিয়াস মধ্যস্থ নিউক্লিয় প্রোটিন দ্বারা গঠিত ক্ষারীয় রঞ্জকে রঞ্জিত পেঁচানো সূত্রাকার অংশকে ক্রোমাটিন জালিকা বলে।
24. নিউক্লিওসাইড কী?
উত্তর: একটি পিউরিন বা পিরিমিডিন বেস এবং একটি পেন্টোজ শর্করা দ্বারা গঠিত নিউক্লিক অ্যাসিডের সাংগঠনিক উপাদানকে নিউক্লিওসাইড বলে।
25. নিউক্লিওটাইড কী?
উত্তর: একটি পিউরিন বা পিরিমিডিন বেস, একটি পেন্টোজ শর্করা ও একটি ফসফেট গ্রুপ যুক্ত হয়ে নিউক্লিক অ্যাসিডের যে সম্পূর্ণ গঠনগত একক তৈরি করে, তাকে নিউক্লিওটাইড বলে।
26. ডিপ্লয়েড কোশ কাকে বলে?
উত্তর: জীবদেহের যে কোশে প্রজাতি নির্দিষ্ট ক্রোমোজোমের প্রতিটি জোড়ায় জোড়ায় থাকে অর্থাৎ দুটি সেট ক্রোমোজোম উপস্থিত থাকে ,তাকে ডিপ্লয়েড কোশ বলে।
27. কোশচক্রের কোন কোন পর্যায়ে ক্রোমোজোম যথাক্রমে একতন্ত্রী ও দ্বিতন্ত্রী হয়?
উত্তর: প্রোফেজ দশার শেষ থেকে মেটাফেজ দশায় ক্রোমোজোম দ্বিতন্ত্রী হয় অর্থাৎ এই দশায় প্রতিটি ক্রোমোজোমে দুটি ক্রোমাটিড থাকে।
অ্যানাফেজ দশায় ক্রোমোজোম একতন্ত্রী হয় অর্থাৎ এই দশায় প্রতিটি ক্রোমোজোম ক্রোমাটিড থাকে ,কারণ দ্বিতন্ত্রী ক্রোমোজোমের সেন্ট্রোমিয়ারের বিভাজনের ফলে সিস্টার ক্রোমাটিড দ্বয় পরস্পর থেকে পৃথক হয়ে যায়।
28. অ্যানাফেজীয় চলন কী?
উত্তর: মাইটোসিস কোশ বিভাজনের অ্যানাফেজ দশায় উৎপন্ন অপত্য ক্রোমোজোমগুলির মধ্যে ইন্টারজোনাল বেমতন্তুর প্রসারণ ও ক্রোমোজোমাল বেমতন্তুর সংকোচনের ফলে অপত্য ক্রোমোজোমগুলির ধীরে ধীরে বেমের উভয় মেরুর দিকে গমন করাকে অ্যানাফেজীয় চলন বলে।
29. টিউমার কী?
উত্তর: কোন বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ কারণে কোশচক্রের চেক পয়েন্টগুলি বিঘ্নিত হলে কোশ বিভাজন অনিয়ন্ত্রিত হয় এবং অস্বাভাবিক সংখ্যায় কোশ সৃষ্টির মাধ্যমে যে কোশপুঞ্জ গঠিত হয় তাকে টিউমার বলে।
30. বোকে স্টেজ কাকে বলে?
উত্তর: মিয়োসিস বিভাজনের লেপটোটিন উপ দশায় ক্রোমোজোমের টেলোমিয়ারের অঞ্চলগুলি নিউক্লিয় পর্দার সঙ্গে সম্পূর্ণ সংলগ্ন থাকে। এর ফলে ক্রোমোজোমগুলিকে ফুলের তোড়ার ন্যায় সজ্জিত দেখায়। বিজ্ঞানী ডার্লিংটন ক্রোমোজোমের এরকম সজ্জাবিন্যাসকে বোকে স্টেজ বলে অভিহিত করেন।
31. দৈত্যাকার ক্রোমোজোম কাকে বলে?
উত্তর: কিছু পতঙ্গদের লার্ভার লালাগ্রন্থিতে অনেকগুলি ক্রোমোজোম সূত্র পাশাপাশি অবস্থান করে বৃহদাকার ক্রোমোজোম গঠন করে। তাই এদের দৈত্যাকার ক্রোমোজোম বলে।
32. কোশচক্র কাকে বলে?
উত্তর: কোষের জীবনকালে একটি কোশ বিভাজনের পরে পরবর্তী কোশ বিভাজন সম্পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত যে সমস্ত বৃদ্ধি ,পরিণতি ও বিভাজন প্রভৃতি ঘটনাবলি চক্রাকারে আবর্তিত হয় ,তাদের একত্রে কোশচক্র বলে।
33. ইন্টারফেজ কাকে বলে?
উত্তর: একটি কোশ বিভাজনের শেষ এবং পরবর্তী কোশ বিভাজনের শুরুর মধ্যবর্তী যে দীর্ঘস্থায়ী দশাতে কোশের বিপাকীয় কাজ দ্রুত হয় এবং সামগ্রিক আয়তন বৃদ্ধি ঘটে তাকে ইন্টারফেজ বলে।
34. জিন কাকে বলে?
উত্তর: ক্রোমোজোম বা DNA বা RNA এর নির্দিষ্ট স্থানে রৈখিক সজ্জাক্রমে অবস্থিত তথ্য সঞ্চয়কারী, প্রতিলিপি গঠনকারী, বহিঃপ্রকাশ ও মিউটেশনে সক্ষম বংশগতির কার্যগত একককে জিন বলে।
35. সাইটোকাইনেসিস কাকে বলে?
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় নিউক্লিয়াস বিভাজনের পর মাতৃকোশের সাইটোপ্লাজম বিভাজিত হয়ে অপত্য কোশ গঠন করে তাকে সাইটোকাইনেসিস বলে।
36. ক্যান্সার কী?
উত্তর: ম্যালিগন্যান্ট কোশের দ্রুত ও অনিয়ন্ত্রিত কোশ বিভাজনের ফলে জীবদেহে যে মারাত্মক অসহনীয় ক্ষতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়, তাকে ক্যান্সার বলে।
37. ইন্টারফেজের বৈশিষ্ট্য গুলি লেখ।
উত্তর: 1. কোশচক্রের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী ও সক্রিয় দশা হল ইন্টারফেজ।
2. কোশের নিউক্লিয় পদার্থ ও সাইটোপ্লাজমের কোশ অঙ্গাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটে।
3. কোষ বিভাজনের জন্য বিপাকীয় শক্তির সঞ্চয় ঘটে।
4. ক্রোমোজোমগুলি সূক্ষ্ম সুতোর মতো গঠনযুক্ত হয় এবং ক্রোমাটিন জালিকারূপে বিন্যস্ত থাকে।
38. ম্যালিগন্যান্ট কোশ কাকে বলে?
উত্তর: যে সমস্ত কোশ দ্রুত এবং অনিয়ন্ত্রিত মাইটোসিস কোশ বিভাজনের মাধ্যমে অসংখ্য দুর্বল প্রকৃতির অপত্য কোশ সৃষ্টি করে, তাকে ম্যালিগন্যান্ট কোশ বলে।
39. মাইটোসিস কোশ বিভাজনের বৈশিষ্ট্য লেখ।
উত্তর: 1. জীবদের দেহকোশে মাইটোসিস কোশ বিভাজন ঘটে।
2. মাইটোসিস বিভাজন প্রথমে নিউক্লিয়াসের বিভাজন বা ক্যারিওকাইনেসিস এবং পরে সাইটোপ্লাজমের বিভাজন বা সাইটোকাইনেসিস এর মাধ্যমে সম্পূর্ণ হয়।
3. এই বিভাজন দ্বারা জীবের বৃদ্ধি, ক্ষয়পূরণ ,পুনরুৎপাদন প্রভৃতি ঘটে থাকে।
4. উদ্ভিদের অঙ্গজ জনন এবং অযৌন জননে রেনু উৎপাদনে সাহায্য করে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন